কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় । ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ...............
কথা সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট গল্প ও উপন্যাস সাহিত্য
Manik Bandopadhyay short stories and novels are literature
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আসল প্রবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় । ১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন,এবং ৩ ডিসেম্বর, ১৯৫৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি পরো- লোক গমন করেন । 'কল্লোল' গোষ্ঠীর লেখক ছিলেন মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়।অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেছেন'কল্লোলের কুলবর্ধন ।কল্লোলযুগের সমসাময়িক হলেও মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটো গল্পে তাঁর দৃষ্টি আগাগোড়াই ছিল নির্মোহ ও সংস্কারমুক্ত। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসার দ্বারা পরিণামে যে ভয়াবহ সত্যই অনাবৃত হোক, তাকে অসংকোচে প্রকাশ করতে দ্বিধাবোধ করেননি।
পূর্ববঙ্গের মানুষ ও তার পরিবেশ ফুটিয়ে তুলেছেন তার লেখার দারা ।তার কয়েকটি শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের নাম হল - দিবারাত্রির কাব্য' (১৯৩৫খ্রিস্টাব্দে), 'পুতুলনাচের ইতিকথা (১৯৩৬খ্রিস্টাব্দে), 'পদ্মানদীর মাঝি' (১৯৩৬খ্রিস্টাব্দে),'শহরতলী' (১৯৪০খ্রিস্টাব্দে), 'অহিংসা' (১৯৪১খ্রিস্টাব্দে) প্রভৃতি।এবং মানিকের গল্পগ্রন্থগুলির নাম হল- 'অতসী মামী' (১৯৩৫খ্রিস্টাব্দে), 'প্রাগৈতিহাসিক' (১৯৩৭খ্রিস্টাব্দে), 'মিহি ও মোটা কাহিনী' (১৯৩৮খ্রিস্টাব্দে), 'সরীসৃপ' (১৯৩৯খ্রিস্টাব্দে) প্রভৃতি।এ ছাড়া ও দুটি রাজনৈতিক গল্প লিখে ছিলেন হারাণের নাতজামাই' ও 'ছোট বকুলপুরের যাত্রী।
‘আত্মহত্যার অধিকার'গল্পটি প্রকাশিত হয় -'অতসী মামী ও অন্যান্য গল্প' এই সংকলন গ্রন্থে ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের আগস্ট মাসে ।এই গল্পের বৈশিষ্ট্য -ভিখু নামে দুর্দান্ত ডাকাতের জীবন ইতিবৃত্ত। লেখক তাকে ছাড়িয়ে মানবজীবনের আদিম বৃত্তি, যৌনতা, ক্ষুধাতৃষ্ণার নির্মম বৈশিষ্ট্য এঁকেছেন শিল্পের সততায়।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভৌতিক কুসংস্কার নিয়ে লেখা 'নমুনা'।এবং মন্বন্তরের শ্মশানচিত্র রয়েছে এমন দুটি গল্পের নাম 'দুঃশাসনীয়' ও 'নমুনা'।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের প্রধান প্রধান চরিত্রগুলি:-
তার বিভিন্ন কাব্যগ্রন্থের যে সকল চরিত্রগুলি মানুষের মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছিল সেগুলি ছিল- শশী, কুসুম, বিন্দু–মানিকের 'পুতুলনাচের ইতিকথা' উপন্যাসের চরিত্র । কুবের, মালা, কপিলা ও হোসেন মিয়া—“পদ্মানদীর মাঝি' উপন্যাসের চরিত্র ।“অতসী মামী। ময়না এবং ভুবন মণ্ডল—মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হারাণের নাতজামাই গল্পের চরিত্র ।দিবাকর ও আন্না—মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোট বকুলপুরের যাত্রী ছোটো গল্পের চরিত্র '।চারু, পরী ও বনমালী — মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'সরীসৃপ'ছোটো গল্পের চরিত্র
বিশ শতকের তিরিশোত্তর কালের বাংলা কথাসাহিত্যে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় একটি বিশিষ্ট নাম এবং সাহিত্য ও সাহিত্যিকের জীবন ও জীবিকার সম্পর্ক নির্ণয় একটি তীক্ষ্ণ জিজ্ঞাসার প্রতীক। প্রথম রচনা 'অতসী মামী' গল্পটিই তাকে সাহিত্যে প্রতিষ্ঠা এনে দেয়। নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং প্রচলিত জীবনের অন্তরালে যে আর এক জীবনের রূপ, সেই রূপের প্রকাশই মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দ্রুত খ্যাতির শীর্ষে উন্নীত করেছিল।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাসের স্বরূপ আলোচনা করতে গিয়ে বলতে হয়-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একশ্রেণির উপন্যাসে বিশাল নদীপ্রান্তরে সাধারণ মানুষের বাস্তবনিষ্ঠ জীবনচিত্র অঙ্কিত হয়েছে, আবার মানুষের কামপিপাসার এক জান্তবমূর্তি এঁকে তিনি আদিম পৃথিবীর অন্ধকারে ফিরে গেছেন। অদ্ভুত নিরাসক্তভাবে তিনি মানুষের জীবনচিত্র এঁকে গেছেন, তাদের জীবনসমস্যার গ্রন্থিমোচনে তৎপর হয়েছেন।
COMMENTS