যেকোনো পরীক্ষার উপযোগী প্রশ্ন উত্তর সহ বাংলা পদ্য সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর Question and Answer Bengali Poetry Rabindranath Tagore
প্রশ্ন উত্তর সহ বাংলা পদ্য সাহিত্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
Question and Answer Bengali Poetry Rabindranath Tagore
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঃ – ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ মে (বাংলা ১২৬৮, ২৫ বৈশাখ) জন্মস্থান উত্তর কলকাতার জোড়াসাঁকো অঞ্চল । তিনি ছিলেন- “ঔপন্যাসিক”, “সংগীতস্রষ্টা”, “নাট্যকার”,”ছোটগল্পকার”, “প্রাবন্ধিক”, বাঙালি কবি । তাঁকে বাংলা ভাষার “সর্বশ্রেষ্ঠ কবি সাহিত্যিক” মনে করা হয়।রবীন্দ্রনাথের কাব্যজীবন কে সাতটি পর্বে ভাগ করা জায় । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ৩৮টি নাটক, ৫২ টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৬টি প্রবন্ধ ও ১৩টি উপন্যাস সহ অন্যান্য গদ্য-সংকলন তাঁর জীবন দ্দশায় বা মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয় । তাঁর সর্বমোট ১৯১৫ টি গান ,গল্পগুচ্ছ ৯৫ টি বিভিন্ন্য ছোটগল্প “গীতবিতান” সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যাবতীয় প্রকাসিত ও অপ্রকাসিত রচনা বইএর আকারে ৩২ খণ্ডে “রবীন্দ্র রচনাবলী” নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যাবতীয় পত্র সাহিত্য ১৯ খণ্ডে চিঠিপত্র ও ৪(চার) পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত হয়েছে । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় আনুবাদ হয়েছে বিভিন্ন্য কবি সাহিত্যিক দ্বারা । ১৯১৩ সালে “গীতাঞ্জলি” কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি ভাষাই অনুবাদের করার জন্য ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে সুইডিশ আকাডেমি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ গৌরব, তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন । রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কে আমরা সকলে বিশ্ব কবি বলে জানি ।
1) রবীন্দ্র
কাব্য জীবনের
পর্ব
বিন্যাস কী কী ?
উত্তর :- সূচনা পর্ব, উন্মেষ পর্ব, ঐশ্বর্য পর্ব, অন্তবর্তী পর্ব, গীতাঞ্জলি পর্ব, বলাকা পর্ব ও অন্তপর্ব ।
2) সূচনা
পর্ব
কোন
সময়কে
আখ্যা
দেওয়া
হয়
?
উত্তরঃ- রবীন্দ্রকাব্য পরিক্রমার প্রথম তিন বছরকে শৈশব বা 'সূচনা পর্ব আখ্যা দেওয়া হয়। ১৮৭৮ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৮১ খ্রিস্টাব্দের মধ্যেই এই পর্বের পুর্ণ বিকাশ ।
3) ‘সূচনা
পর্বের'
কবিতার
বৈশিষ্ট্য
কী?
উত্তরঃ- 'সূচনা পর্বের অধিকাংশ কাব্যই রোমান্টিক, গীতিধর্মী উচ্ছাসপূর্ণ আখ্যান কাব্য ; সে আখ্যান প্রায়ই ব্যর্থ প্রেমে পরিণত হয়েছে এবং সে ব্যর্থ প্রেমের নায়ক হচ্ছেন একজন কবি । এই কবির মধ্য দিয়ে আমাদের কিশোর কবি অপরিণত বয়সের ব্যক্তিগত আকাক্সক্ষার পরিপূর্ণতা কামনা করেছেন ।
4) ‘উন্মেষ
পর্ব
কোন
সময়কে
আখ্যা
দিতে
পারি
?
উত্তরঃ- ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত চার বৎসরের মধ্যে কবির যে কাব্যগুলি প্রকাশিত হয়, তার মধ্যে সর্বপ্রথম কবি রোমান্টিক মহাকাশ সজ্ঞারণ পরিত্যাগ করে পৃথিবীর মাটিতে নেমে এলেন এবং এই পর্ব থেকেই তাঁর কাব্যধারার যথার্থ বিকাশ শুরু হল। ১৮৮২-১৮৮৬ খ্রিস্টাব্দ এই সময়কে তাই ‘উন্মেষ পর্ব' আখ্যা দিতে পারি ।
5) উন্মেষ
পর্বে
রবীন্দ্রনাথ
কোন্
কাব্যগুলি
লিখেছিলেন
?
উত্তর :- ‘সন্ধ্যাসংগীত' (১৮৮২), ‘প্রভাতসংগীত' (১৮৮৩), 'ছবি ও গান' (১৮৮৪), ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলী' (১৮৮৪), 'কড়ি ও কোমল' (১৮৮৬) প্রভৃতি ।
6) উন্মেষ পর্বের
উল্লেখ
যোগ্য বৈশিষ্ট্য কী ?
উত্তর :- এই পর্বে রবীন্দ্রনাথ অস্ফুটভাব ও তরল আবেগের পিচ্ছিল পথ ছেড়ে স্বকীয় ভাবভাবনার মধ্যে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হলেন। এদিক দিয়ে সন্ধ্যাসংগীত’ ও ‘প্রভাতসংগীত’ দুখানি কাব্য উল্লেখ যোগ্য উত্তর : এই পর্বে রবীন্দ্রনাথ অস্ফুটভাব ও তরল আবেগের পিচ্ছিল পথ ছেড়ে স্বকীয় ভাবভাবনার মধ্যে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হলেন। এদিক দিয়ে সন্ধ্যাসংগীত’ ও ‘প্রভাতসংগীত’ দুখানি কাব্য সর্বাগ্রে উল্লেখ যোগ্য ।
7) " হৃদয় আজি মোর কেমনে গেল খুলি
জগৎ আসি
সেথা করিছে কোলাকুলি " ।
উত্তর :- রবীন্দ্রনাথের ‘প্রভাত সংগীত' (১৮৮৩) কাব্যগ্রন্থ
থেকে উৎকলিত কবিতাটি নেওয়া হয়েছে ।
8) " মরিতে চাহি না আমি সুন্দর ভুবনে
মানবের
মাঝে আমি বাঁচিবাৰে চাই " ।
কবিতাটি কোন কাব্য থেকে উৎকলিত ?
উত্তর :- কড়ি ও কোমল কাব্য থেকে উৎকলিত ।
বাংলা সাহিত্যে
অন্যান্য
কবিদের
নিয়ে
আলোচনা |
9) 'খেয়া'
কাব্যগ্রন্থের
মূলভাব
ব্যাখ্যা
।
উত্তর :- “খেয়া' নামটি গভীর ইঙ্গিতবহ। এই কাব্যেই রবীন্দ্রকাব্যের অন্তর্বর্তী পর্ব সমাপ্তি ঘোষিত হয়েছে । এই সময়ের কিছু পূর্ব থেকেই কবির জীবনে নানা বিক্ষোভ ও অশান্তি ধূমায়িত হচ্ছিল । একদিকে ব্যক্তিগত জীবনের জড়ত্ব, অন্যদিকে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন নিয়ে দেশের মানুষের সঙ্গে কবির যোগ স্থাপন । বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন উপলক্ষ্যে রাজনৈতিক দলাদলি আর রক্তাক্ত বিদ্বেষের মধ্যে কবি চুপ করে থাকতে পারলেন না। সন্ত্রাসবাদের চাপা গর্জনকে উপেক্ষা করে খেয়ারি নিয়ে অকুলে ভাসলেন ।
10) গীতাঞ্জলি' পর্বে
রবীন্দ্রনাথ
কোন
কাব্যগুলি
লিখেছিলেন
?
উত্তর:- গীতাঞ্জলি' (১৯১০), “গীতিমাল্য' (১৯১৪), গীতালী (১৯১৫)।
11) গীতাঞ্জলি
পর্বের
বৈশিষ্ট্য
কী?
উত্তর :- “গীতাঞ্জলি পর্বের বৈশিষ্ট্য বিচার করে একে রবীন্দ্র কবি-জীবনের অধ্যাত্মপর্বও আখ্যা দেওয়া যায় । কারণ এই তিনখানি গীতিসংগ্রহের মূলকথা কবির সঙ্গে তার ঈশ্বরচেতনার অঙ্গাঙ্গী সম্বন্ধ ।
12) ‘বলাকা
পর্ব
কোনটি
?
উত্তর :- রবীন্দ্র-কবিজীবনের সর্বশেষ পরিণত পরিপক পর্বকে আমরা 'বলাকা' কাব্যনামানুসারে বলাকা পর্ব রূপে চিহ্নিত করতে পারি ।
13) বলাকা
পর্বে
রবীন্দ্রনাথ
কোন
কোন
কাব্য
রচনা
করেন
?
উত্তর :- "বলাকা' (১৯১৬), পুরবী (১৯২৫) এবং ‘মহুয়া' (১৯২৯)।
14) "বলাকা
কাব্যে
কীসের
জয়গান
করা
হয়েছে
?
. উত্তরঃ- জড়ত্ব: নস্যাৎ করে গতিবাদের জয় ঘােষণা করা হয়েছে।
15) "বলাকা”
কাব্যে
গতিবেগের
কবিতা
কোনগুলি
?
• উত্তর:- বলাকা',
'সাজাহান”, “ছবি', 'চঞ্চল” প্রভৃতি।
16) “শৈশৰ
সংগীত' কত খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত
?
উত্তর:- “শৈশৰ সংগীত' কত খ্রিস্টা প্রকাশিত ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে ।
17) ঐশ্বর্য
পর্ব',
কোনটি
?
উত্তরঃ- রবীন্দ্রনাথের তিরিশ থেকে পঁয়ত্রিশ বৎসরের মধ্যে লেখা পর্বটি ঐশ্বর্য পর্ব বা সর্বশ্রেষ্ঠ পর্যায়।
18) 'ঐশ্বর্য
পর্বকে
সর্বশ্রেষ্ঠ
বলার
কারণ
কী
?
উত্তর :- কারণ কবির অতিপ্রসিদ্ধ কাব্যের অনেকগুলি এই পর্বে প্রকাশিত হয়। শিল্পরূপ, আবেগ, রোমান্টিকতা ও গভীর প্রত্যয়ের এমন সমন্বয় অন্য পর্বে এতটা হয়েছে কিনা সন্দেহ ।
19) ঐশ্বর্য
পর্বে
রবীন্দ্রনাথ
কোন
কাব্যগুলি
লিখেছিলেন
?
উত্তরঃ- 'মানসী" (১৮৯০), “সোনার তরী' (১৮৯৪), 'চিত্রা' (১৮৯৬), 'চৈতালী" (১৮৯৬) প্রভৃতি ।
20) 'মানসী' কাব্যগ্রন্থের
মূল
ভাব
ৰন্তু লেখ ৷
উত্তর :- 'মানসী' (১৮৯০) কাব্যে কবি শেষ পর্যন্ত মর্ত্যকেন্দ্রিক বাসনাবন্ধ থেকে মুক্ত হয়ে অনাদিকালের হৃদয়-উৎস’ থেকে প্রবাহিত যুগল প্রেমের স্রোতে ভেসে গেছে এবং আশা দিয়ে, ভাষা দিয়ে, তাহে ভালবাসা দিয়ে গড়ে তুলি মানস প্রতিমা—এই কথা বলে দ্বন্দ্ব বিক্ষোভের জগৎ থেকে বিদায় চেয়েছেন ।
21) ‘সোনার
তরী'
কাব্যের
মূল
উপজীব্য
কী
?
উত্তর :- ‘সোনার তরী' ' (১৮৯৪) রবীন্দ্র কবিজীবনের একটা বিশেষ প্রতীক বলে গৃহীত হতে পারে । এ কাব্যে নিসর্গের অপূর্ব মাধুরী ব্যক্তিমানসের সঙ্গে একীভূত হয়ে গেছে। কবি যেন জাতিস্মর হয়ে সুদূর অতীত থেকে অনাগত ভবিষ্যতের মধ্যে নিজ জীবনপ্রবাহকে অঙ্গীভূত করে উপলদ্ধি করলেন ।
22) “পনশ্চ'
কাব্যের
কয়েকটি
কবিতার
নাম
লেখ
?
উত্তর :- কোপাই', 'বাঁশি', “ছেলেটা', 'ছেড়াকাগজের ঝুড়ি', 'ক্যামেলিয়া, সাধারণ মেয়ে' প্রভৃতি ।
23) রবীন্দ্রনাথের কাব্যের
প্রধান
সুর
কী
?
উত্তর :- রবীন্দ্রনাথের কাব্যের প্রধান সুর কাল্পনিক সৌন্দর্য-বিরহের বেদনা-প্রকাশ। তাঁর জীবন ও প্রকৃতিবিষয়ক সুগভীর ভাবনা কবিতায় রূপ পেয়েছে ।
24) সংক্ষেপে
রবীন্দ্রকাব্য
পরিক্রমা
।
উত্তর :- সন্ধ্যাসংগীত’ থেকে ‘মানসী পর্যন্ত তাঁর উন্মেষ বা প্রস্তুতিকাল। 'মানসী' থেকেই তাঁর কবিতার মধ্যে পরিণতির চিহ্ন ধরা পড়তে থাকে। সোনার তরী' থেকে 'ক্ষণিকা পর্যন্ত কবি সৌন্দর্য-বিহুলতা ও মর্ত্যপ্রেমের গান ধরেছেন। “খেয়া থেকে ‘গীতালি পর্যন্ত অমর্ত্যলোকের সুর শোনা যায় । 'বলাকায় আবার মর্তে প্রত্যাবর্তন। বনবাণী', 'মহুয়া', পূরবী' কাব্যে প্রৌঢ় কবির যৌবন-স্মৃতি রোমন্থন চলেছে এবং নতুন করে প্রকৃতিরস, সম্ভোগ। পরিশেষ' থেকে আধুনিক রীতির চর্চা । কোথাও গদ্যছন্দের ব্যবহার। মৃত্যু চেতনার পটভূমিতে রূপকল্পের নব-নব পরীক্ষা নিরীক্ষা ।
COMMENTS